আঞ্চলিক প্রবাদঃ মাগুরা



মাগুরার আঞ্চলিক প্রবাদ-প্রবচন
খোন্দকার ইনামুল কবীর

[মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার প্রবাদ-প্রবচন সংকলন করেছেন যশোর মাইকেল মধুসূদন কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ প্রফেসর খোন্দকার ইনামূল কবীর। সংকলনে ব্যবহৃত হয়েছে আঞ্চলিক উচ্চারণরীতি। সংকলিত প্রবাদগুলির অধিকাংশ তিনি তার ‘অত্যন্ত শ্রুতিধর’ মা হামিদা খাতুনের মুখে শুনেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘জান্নাত হোসেন মোল্লাার মেয়ে আমার মা চতুর্থ শ্রেণীতে জলপানি পাওয়ার পর আর এগোননি। বারোর আগেই শ্বশুরবিহীন শ্বশুরবাড়ীতে এসেছেন।’

এখানে তিনি মোট ৩৭৩টি প্রবাদ সংকলন করেছেন। প্রত্যেকটি প্রবচনের অর্থ বন্ধনীর মধ্যে লিখে দিয়ে তার ব্যবহার সহজতর করেছেন। তারপর তিনি তা বর্ণানুক্রমে সাজিয়েছেন। প্রবচনগুলি হয়ত দেশের অন্যত্র ভিন্ন উচ্চারণে বলা হয়ে থাকতে পারে। তবে, ইনামুল কবীর অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে নিজ গ্রাম পুলুমে প্রচলিত প্রবচনগুলি আঞ্চলিক উচ্চারণে সংকলন করে অত্যন্ত জরুরি একটি দায়িত্ব পালন করেছেন।
যশোর অঞ্চলের উচ্চারণরীতির কিছু নমুনা এখানে দেখানো হল । ডাকে>ডাহে, টাকা>টাহা, ফকির>ফহির,
 এলো>আলো, আঁধার>আন্দার/আন্ধার, মনন্তর>মানান্তর, এঁড়ে>আইড়ে, চেয়ে>চাইয়ে, পথে>পতে, সকল>সগল, লোহা>লুয়া, পিঠা>পিঠে>ফিটে ইত্যাদি।

বিজ্ঞজনেরা বলেন যে, কোন এলাকায় প্রচলিত প্রবাদ তথা আঞ্চলিক লোক-কথা, লোক-প্রবাদ থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষ্টি-সংস্কৃতির নানা পরিচয় পাওয়া যায়। যে অর্থে ঐ প্রবাদগুলো প্রচলিত অনুরূপ অর্থবোধক ভিন্ন প্রবাদ অন্যত্র ও অন্যভাবে প্রচলিত থাকতে পারে। বলার অপেক্ষা রাখে না, প্রচলিত প্রবাদগুলো সংশ্লিষ্ট এলাকার অমূল্য সম্পদ। আমি মনে করি, আঞ্চলিক প্রচলিত প্রবাদের দিক দিয়ে আমাদের এলেকা অ-ত্য-ন্ত সমৃদ্ধ। এর লিখিত কিংবা অন্য কোন প্রকারে আমাদের এই অমূল্য সম্পদ সংগৃহীত হয়নি এবং একইভাবে প্রবাদ সৃষ্টির নতুন প্রয়াসের গতি-প্রকৃতিও কেউ খেয়াল করেন নি। যুগ-যন্ত্রণা যত বাড়ছে, নতুন নতুন প্রবাদ বা ‘সুমিস্যে’ সৃষ্টির ক্ষেত্রও ততই প্রসারিত হচ্ছে। আমাদের এলাকায় প্রচলিত তিন শতাধিক প্রবাদ বা মিছাল বা ‘সুমিস্যে’ আমি লিখে রাখবার চেষ্টা করেছি। উল্লেখ্য, ‘মিছাল’ বা ‘সুমিস্যে’ শব্দ দুটো প্রবাদকে বুঝাতেই আমাদের এলাকায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আর এ সমস্ত প্রবাদ বা সুমিস্যের ৭৫ শতাংশই আমি আমার মার মুখে শুনেছি। কথা বলতে হলে কিংবা উদাহরণ দিতে গিয়ে এ সবের অত্যন্ত অনায়াস উচ্চারণ তাঁর পক্ষে কিভাবে সম্ভব হোত, আমি আজও অবাক হয়ে ভাবি! আমার মা ছিলেন অসামান্য শ্রুতিধর। হয়ত তার ছিটেফোঁটা তিনি আশীর্বাণী হিসেবে আমাকে দিয়ে গেছেন। বসত্তত, এসব বাহুল্য কিছু প্রয়াসের মূল কারণ হল এর মাধ্যমে আমার মার স্মৃতিকে ধরে রাখার সচেতন চেষ্টা। তাঁর ‘উপরেও কালা ভিতরেও কালা’র কিছুটা হলেও প্রশান্তি লাভ করবে। বলা বাহুল্য, এসব উপমা বা প্রবাদ মার মুখে কিংবা কিছু অন্য মুখেও যেভাবে উচ্চারিত হতে শুনেছি, হুবহু তাই লিখবার চেষ্টা করেছি। তবে স্থান ও ব্যক্তিবিশেষে উচ্চারণের হেরফের থাকায় কিছু পার্থক্য হতে পারে। তেমনটি হলে ও জানতে পারলে খুশি হবো। বলে রাখা ভালো, এক-আধটা ক্ষেত্রে নিতান্তই শ্লীলতার প্রশ্নে শব্দ বা বানানে সামান্য পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছি। - সম্পাদক]

স্বরবর্ণ অংশ


১। অভিশাপের সংসারে সুখ অয় না (কারো অভিশাপ থাকলে সে সংসার সুখের হয় না)।
২। অফলা ফলে বেশি, অবলা বলে বেশি (কম দরকারী জিনিস বেশি জন্মে)।
৩। অতডা গুড় আধ সের না (ছোট ভাববার অবকাশ নেই)।
৪। অত বড্‌ডা চ্যালা (বড়কে তুচ্ছ জ্ঞান করা)।
৫। অত ভালো ভালো না (বহু কিছুরই বেশি ভালো খারাপে পর্যবসিত হয়)।
৬। অতি বাইড় বাইড়ে না ঝড়ে ভাংবে, অতি
  খাটো হোয়ো না ছাগলে মোড়বে। (মাঝামাঝি অবস্থাই উত্তম)।
৭। অস্যলো খাওয়া যায়, অস্যলো সওয়া যায় না (সহ্যের অতীত)।


১। আপনি শুতি জাগা পায়না, শংকরারে ডাহে (নিজেরই অনিশ্চয়তায় অন্যকে আশ্বস্ত করা ঠিক নয়।)।
২।
  ‘আরল বনে সরালির ডিম গিজ গিজ করে’ ‘চারডে নিয়ায় গে দি’ ‘কিচ্ছুই না’। (দূরের প্রাচুর্যের গল্প কদাচিৎ সত্যি হয়)।
৩। আলো কতা, গ্যালো বালাই (অহেতুক কথা না বাড়ানো)।
৪। আসবে জামোই নেবে ঝি, জামোইর রাগে পাবে কি (জামাই এর অধিকারের সীমা)।
৫। আমিও ফহির হলাম, দ্যাশেও মানান্তার লাগলো (কোথাও সাহায্য না পাওয়া)।
৬। আইড়ে গরু নাইড়ে জাত, বন বাদাড় আন্দার রাইত (বেয়াড়া দুরন্তের কাছে স্থান কাল পাত্র ভেদ নেই)।
৭। আইড়ের রাগ বাইড়ের উপর (মাছ না পেয়ে ছিপ কামড়ানো)।
৮। আলোক লতার আবার পরগাছা (যে নিজেই স্থিতিহীন সে অনুরূপ আরেক জনের ভার নিতে পারেনা)।
৯। আম-দুধ মিশে যাবে, আদাড়ের আঁটি আদাড়ে যাবে (মধ্যস্থতা কারীকে দূরে সরে যেতে হয়)।
১০। আন্দার ঘরে সাপ, সগোল ঘরে সাপ (অজানার ভীতি সব খানেই সমান)।
১১। আপন চাইয়ে পর ভাল, পরের চাইয়ে জোংগোল ভালো (আপন জন মন: কষ্টের কারণ হওয়া)।
১২। আপন দোষে মরে বান্দা দেয় আল্লার দোষ (নিজের দোষ আল্লার উপর চাপানো)।
১৩। আগাছার বাইড় বেশি (অবাঞ্ছিতের দৌরাত্ম বেশি থাকে)।
১৪। আগ আলা যে পতে, পাছ আলা সেই পতে (বড়কে ছোটরা অনুসরণ করে)।
১৫। আড়ে নেই তার ফোঁড়ে আছে (মূল বসত্তুর চাইতে জাহির বেশি করা)।
১৬। আল্লার আশায় খাই, আর বান্দার আশায় ছাই (আল্লাহর ইচ্ছাতেই সব হয়)।
১৭। আরে আরে হারান, ঘরে ঢুকিছে মোছলমান (সংসারে শনির প্রবেশ)।


১। ইয়ার মাওন্দীর মসলা হলি কাঞ্চনী বড়ই পাকাতি পারে (অপরের জিনিস হাতে পেয়ে বাহুল্য ব্যয় করা)।


১। উৎপাতের ধন চিৎপাতে যায় (ফাও প্রাপ্তি ফাও কাজেই ব্যয় হয়)।
২। উড়ে আলো শ্যাক, তার ধচমচিখান দ্যাখ (হঠাৎ উপস্থিত হয়ে বড় বড় কথা বলা)।
৩। উচিত কতায় মাওই ব্যাজার, গরম ভাতে বিলেই ব্যাজার (উচিত কথা ও কাজ অনেকেরই অপছন্দ)।
৪। উঝা থুয়ে মান্দুর কুতাচ্ছে (আসল ছেড়ে নকলের উপর শোধ তোলা)।
৫। উরোৎ দেহায় ছয়মাস (আশা দিয়ে দিয়ে রাখা)।
৬। উমি মানুষ চোহিদারী বুজিনে (নিজেকে প্রচ্ছন্ন রাখা)।
৭। উদোন নেই মাইদেন নেই, যহোন খুশি যা (যে সময়-অসময় বিচার করে না)।


১। ঊন ভাতে দুনো বল, ভরা ভাতে রসাতল (খিদে রেখে খাওয়া ভালো)।


১। এ গায় ভাতার নেই, জগদল যাও (স্থানীয় ভাবে যার সমাধান সম্ভব)।
২। এক চামুচ ক্ষীর, তার আশি হাজার পীর (স্বল্প জিনিসের অসংখ্য দাবীদার)।
৩। একেতো নাচনী বুড়ি, তাতে পাইছে ঢোলের বাড়ি (অতি উৎসাহীর আরো খুশি হবার কারণ ঘটা)।
৪। একটার মুখ সোনা দিয়ে ভরানো যায়, পাঁচটার মুখ ছাই দিয়েও ভরানো যায় না (অধিক জনের সনত্তষ্টি কষ্টসাধ্য)।
৫। এ খামে তে তাইরে খাটপেনানে (যাকে নরম করা যায় না)।
৬। এক নামাজে ঘাটে (লোক দেখানো অজুহাতে নিজ দায়িত্ব পালন না করে সময় শেষ করা)।
৭। এক পয়সা নেই থলিতি, লাফদে পড়ে গলিতি (কৃত্রিম বড়-মানুষেতা দেখানো)।
৮। এই মানুষ বনে গিলি বন মানুষ হয় (মানুষ পরিবেশের প্রভাবাধীন)।

১। ওরে আমার নসীবির দোষ (ক্ষোভে দু:খে কপাল চাপড়ানো)!
২। ওই তাই তিন আবালের দুদ (প্রত্যাশার তুলনায় অকিঞ্চিৎকর প্রাপ্তি)।
৩। ওঠ ছেমড়ি তোর বিয়ে, আইছে নোলক নিয়ে (বুঝে উঠার আগেই সম্মতি প্রদানে বাধ্য হওয়া)।

ব্যাঞ্জনবর্ণ অংশ

১। কামে কুঁড়ে ভোজনে দেড়ে, খাওনে বসে মাইজে জুড়ে (কাজে নেই, খাওয়ার সময় আগে আসা)।
২। কাজে খল দুধি জল, তার দুক্কু চিরকাল (আলসের এবং দুধে পানি দিয়ে বিক্রেতার অভাব যায়না)।
৩। কপালে আছে ঘি, না খাইয়ে করি কি (ভাগ্যের পরে হাত নেই)।
৪। কুঁড়ে গরুর আটালি সার (অকর্মণ্যের শুধু বড় বড় কথা থাকে)।
৫। কাংগালের ছাওয়ালের নুংগাই ভাওড়া (সামর্থের অতিরিক্ত প্রদর্শন অনুচিত)।
৬। কাঙালের কতা বাসি হোলি খাটে (ধর্তব্যের বাইরের কারো উপদেশও কাজে লাগতে পারে)।
৭। কালে কয় আর বুবায় শোনে, যা কয় তাই হয় হয় (ভালো মন্দ না শুনে বুঝেই সায় দেয়া)।
৮। কি ছিলুম কি হলুম রে, যে কলু সেই কলুরে (কাঁচা পয়সায় হঠাৎ দেমাগ দেখানো)।
৯। কেহ নাচে ধনে জনে, কেহ নাচে বুচা কানে (সামর্থের বাইরে উৎসাহ দেখানো)।
১০। কামাতি পারেনা নাপিত ধামা ভরা ক্ষুর, কামাতি কামাতি যায় রঘুনাথপুর (অযোগ্য লোকের যোগ্যতা জাহির করা)।
১১। কামালি কুমোলি বর, আর লেপলি পুছলি ঘর (যতনে সুশ্রীতা প্রকাশ পায়)।
১২। কাল গেলি মাংটামী সার (যখন যা মানায়না, তখন তাই করা)।
১৩। কল্লার ঘাড় বল্লায় ভাংগে (বজ্জাতের শাস্তি অন্যভাবে হয়ে যায়)।
১৪। কাজ থুয়ে মারে মাছ, বিধি লাগে তার পাছ (জরুরী কাজ ফেলে শখের মাছ মারা ক্ষতির কারণ)।
১৫। কুতায় দাড়ি চৈদ্দ সিহে, মা কইচে সাড়ে তিন (মার কথাতেই সম্পূর্ণ বিশ্বাস)
১৬। কারো বাঁশ যায়, কেউ ফাপ গোণে (অন্যের সর্বনাশে প্রীত হওয়া)।
১৭। কলা আলার কলা না, ধামা আলার কলা (জোর করে দ্রব্যে মালিকানা প্রতিষ্ঠিত)।
১৮। কূটা ধূয়া তিন মালসা (অঙ্গ বিশেষের অস্বাভাবিক আকার প্রাপ্তি )।
১৯। কানার মেলে কানী, আর রাজার মেলে রাণী (যে যেমন সে তেমনি পায়)।
২০। কও ছুটু এর মানে কি (প্রত্যাশার বাইরে কিছু হওয়া)।
২১। কৈলক্যাতায়ও গিলাম না, ভেরীগুডও শিখলাম না (মানানসই আচরণ না করা)।
২২। কার দৌলতে সিঁন্দুর পরো, ঠাহুর চেনোনা (আসল কাজের ব্যক্তিটিকে উপেক্ষা করা)।
২৩। কিনা চালির গুণা ভাত, কম পড়লি যাবে জাত (কেনা খাওয়াতে অধিক সতর্কতা প্রয়োজন)।
২৪। কিনা গরুর দাঁত ধরে কি হবে (কেনার পরে ভালো মন্দ বিচার ঠিক নয়)।
২৫। কামার বুড়ো হোলি লুয়া শক্ত হয়ে যায় (বয়স বেশিহলে স্বাভাবিক কাজেও কষ্ট বেশি হয়)।
২৬। ক্যাক করলি কেঁছো ডুবি (কথার শুরুতেই বুঝতে পারা)।
২৭। কোন কালে খাইছি দৈ, সেই কতা আজকে কই (ক্ষেত্র বিশেষে অতীত উদাহরণ নিষপ্রয়োজন)।
২৮। কপালে থাকলি নুড়োয় গু বাইদে আসে (কপাল খারাপ হলে সামান্য কিছুতেই ক্ষতির কারণ ঘটে)।
২৯। কুত্তার প্যাটে ঘি হজম হয় না (অনভ্যাসে ভালো জিনিস গ্রহণ করতে না পারা)।


১। খ্যাতে বেগুন নেই তাও কুঁড়ের ভাওড়া আছে (অসারতা প্রদর্শন)।
২। খাপের খাপ মুনতাজালীর বাপ (যেমনটি যেখানে প্রয়োজন, মিলে যাওয়া)।
৩। খাওয়ার পর খাওয়া আর ডুয়ার পর শুয়া (কাজ কাম না করে শুয়ে বসে কাটানো)।
৪। খালাম না, ছুলাম না লাগলো ভালো (অকারণে দোষের ভাগী হওয়া)।
৫। খালি হাড় কুত্তোয়ও চাটে না ( নির্গুণের কদর কেউ করেনা)।
৬। খাইছো কই, যাচ্ছো কই (ইচ্ছে করে বিপদ ডেকে আনা)।
৭। খ্যাতের কুনা আর বাণিজ্যির সুনা (জমিক্ষেত সোনার চাইতেও দামী)।
৮। খালে খাও ওজোনে পাওনা (সংসারে থেকেও উদাসীন হয়ে চলা)।
৯। খ্যাদাইনে তোর উঠোন চোষি (কাউকে উচ্ছেদে পরোক্ষ ব্যবস্থ্যা নেয়া)।
১০। খাইছেৎ যায় মলি আর ইল্লেৎ যায় ধুলি (মরার আগে স্বভাব আর ধোয়ার আগে ময়লা যায় না)।
১১। খাবো ডাইলদে ভাত, তাতে বিলেই তাড়াতি যাবো কেন (সরল জীবন যাত্রায় দ্বন্দ্বে
  জড়ানো ঠিক নয়)।
১২। খাজনার চাইয়ে বাজনা বেশি (কাজের চেয়ে প্রচারণা বেশি)।
১৩। খাতি খাতি হাইগে দিয়া, খাওয়া বোলে কারে (অবাধে সাধ্যাতীত খেয়ে চলা)।
১৪। খুঁটোর জোরে ম্যাড়া কোন্‌দে (পিছনে জোর থাকলে দুর্বলও আস্ফালন দেখায়)।


১। গুতেঁ উঠে গেছে (যে বিষয় নিয়ে অনেক প্যাঁচড়ানো হয়েছে)।
২। গাছে নাই উঠতি তলায় এক কাইন (মোটের উপর তর সয়না)।
৩। গাছ কাটলি গায় পড়ে, দায় ঠেকলি নায় চড়ে (নিজের সৃষ্ট অশান্তিতে নিজে ভোগা)।
৪। গাজীর বাগ বোনদে মানায় না (যাকে ঠেকানো অসম্ভব)।
৫। গাজীর গীত না মদ্দের বাতান (নির্মল আয়োজনে অবাঞ্ছিতের সমাবেশ)।
৬। গায় গু মাখলিও যমে ছাড়েনা (ভবিতব্যকে কোন ভাবেই এড়ানো যায় না)।
৭। গালে আলো চাইল (বাধ্য হয়েই উচিত জবাব দিতে না পারা)।
৮। গাই বাছুর ঠিক থাকলি আন্দারেও দুয়ানো যায় (মতে এনে আড়ালেও স্বার্থোদ্ধার সম্ভব)।
৯। গরু বেচে জরু কিনে না (বিয়ের ব্যয়ে গরু বেচতে নেই)।
১০। গিন্নি হোলি চুন্‌নী হোতি হয় (বন্টনের স্বার্থে গৃহিণীকে প্রয়োজনে মিথ্যেও বলতে হয়)।
১১। গুড় যত দিবা ততই মিষ্টি লাগবে, আর মিষ্টি গুড় হোলি আন্দারে খালিও মিটে লাগে (অধিকতর বিনিয়োগ সুফলই বয়ে আনে)।
১২। গজালে ঝিম দিয়ে না (দায়িত্ববান ব্যক্তির কৌশলে দায়িত্বপালন থেকে সরে থাকা)।
১৩। গাংগের কূলি ভাংগের গাছ, চিলি বানাইছে বাসা; অমানষির সাথে পিন্নয় করে পিঠ হলো মোর ফাসা (অমানুষের সাথে বন্ধুত্বে বিপদ বাড়ে)।
১৪। গোনে নাইয়ে, বোগোনে মরে বাইয়ে (অনুকুল অবস্থায় আরাম করলে প্রতিকুলে কষ্ট বেশি হয়)।
১৫। গ্যালো গ্যালো পাঁচ সিহের মুরগী গ্যালো, বন বিলেইর মনতো বুজলাম (স্বল্পতি স্বীকারে স্বার্থবাদীকে চেনা যায়)।
১৬। গোয়ালের দৈ গোয়ালে টক কয় না (নিজের বিক্রীতব্য জিনিসের দোষ নিজে স্বীকার করে না)।
১৭। গোয়াল সাবালোক হয় না বাহাত্তর বছরে (বয়সের সাথে বুদ্ধির পরিচয় দিতে না পারা)।


১। ঘেচুর বিটা কচু, বড় বাড়ে তো মান ( সব কিছু বৃদ্ধির একটি সীমা থাকে)।

২। ঘাই গরজ না গরজ ঘাই (অন্যের প্রয়োজনে
  নিজে উৎসাহিত হওয়া)।
৩। ঘুঘু দেখিছো, ফান দ্যাখোনি (কৌশলে নিষকৃতি লাভের ভবিষ্যত অনিশ্চয়তা)।
৪। ঘুড়া দেখলি খুঁড়া হয় (অযাচিত সুবিধা ভোগ করতে চাওয়া)।
৫। ঘসে মাইজে রূপ আর ধরে বাইনদে বসত হয়না (প্রবাদের অনুরূপ)।
৬। ঘর বানতি দড়ি আর বিয়ে কামে কড়ি (প্রবাদের অনুরূপ)।
৭। ঘুরোলি খুন্‌তা আর ফিরেলি লাঠি (দুদিকই কাজের)।
৮। ঘোনো কতা যার, চুপো আম তার (বেশি সাফাই গাইলে বুঝতে হবে, গলদ আছে)।
৯। ঘোম নেই রুগীর আর ঘোম নেই সুগীর (রোগী এবং ধনীর ঘুম হয় না)।
১০। ঘোম মানেনা শ্মাশানঘাট, প্রেম মানেনা জাত বেজাত (ঘুম ও প্রেম স্থান-কাল-পাত্র মানে না)।
১১। ঘুরো পুরোয় খাওয়া (সাধ্যাতীত/আকণ্ঠ পান করা বা খাওয়া)।
q


১। চার বেদ চতু:শাস্ত্র, তার পর ঠ্যাংগাই অস্ত্র (ভালো কথায় কাজ না হলে শক্তি প্রয়োগ প্রয়োজন পড়ে)।
২। চাইর আইল উঁচো, মদ্দি নিচে, ধীরে ফ্যালে পাও/যার মা ভালো তার ছা ভালো, বাওরে মাঝি বাও (চার আল উঁচু জমি, ধীর গামী গাভী এবং মা ভালো
  হলে মেয়ে ভালো হয়)।
৩। চাচীর ছালুনীর জাগায় জাগায় ত্যাল আর জাগায় জাগায় নুন (পক্ষপাতিত্ব করা)।
৪। চাচার পাতে এটটু ডাইল দ্যাও (নিজের প্রয়োজনের কথা পরোক্ষে জানিয়ে দেয়া)।
৫। চুল পাকিছে বাইতি, বুড়ো হইছি কি তাইতি (মানুষ বার্ধক্যকে স্বীকার করতে চায়না)।
৬। চোরেরে কও চুরি করো, গেরস্তরে কও চ্যাতনা থাহো (দুমুখো সাপ)।
৭। চাচা আপন, চাচী পর : চাচীর মাইয়ে বিয়ে কর (সম্পর্ক জায়েজ করা মছলা)।
৮। চো’তে বেগুন থাইপ্পো দর (শেষ সময়ে জিনিসের কদর কমে যায়)।
৯। চো’তে গুরম্নর মো’তে শিষ্য (অনাড়ীপনার দারুণ প্রদর্শন)।


১। ছাওয়ালরে কামড়ালো ধুড়া সাপে, মাইয়ে মলো তার বিষি (অহেতুক আদিখ্যেতা দেখানো)।
২। ছোট সরাডা ভাইংগে গেছে,বড়সরাডা আছে/কেনরে বৌ নাচো গোচো, হাতের ওজন আছে (অভিজ্ঞের আন্দাজে কমই হের ফের হয়)।
৩। ছোট সাপের বড় বিষ, ধানীঝালে জিভেয় শীষ (ছোট জিনিসের ও বড় কিছু করার ক্ষমতা থাকে)।
৪। ছোট থাকতি মারলাম না মরবে বলে/বড় হলি মারলাম না মারবে বলে (সন্তানের সাথে ব্যবহারে সর্বদাই সচেতন থাকতে হয়)।
৫। ছাই ফেলতি ভাংগা কুলো, গু ফেলতি নূড়ো (তুচ্ছ উপেক্ষিতও দরকারে লাগে)।
৬। ছোবদুর কাছে আবার আইড়ে গরু (গায়ের জোরে কিছু পরোয়া না করা)
৭। ছোয়ালডা সরাও আমার মাইয়েডা শুয়াবো (নিজের জিনিসকে বেশি গুরুত্ব দেয়া/যত্ন করা)।


১। জিইয়েল খাইনে, জিয়েলির পুছা খাই (খাই কিন্তু ভান করি না খাওয়ার)।
২। জোনের জন্যি পোটোল তরকারি না (উচুঁ নিচু ভেদাভেদ করা)।
৩। ‘জামোই ফিটে খাবা’? ‘কি ফিটে’? ‘না খাইল্যে, না খাইল্যে’ (সুকৌশলে খরচ বাঁচানো )।
৪। জাত কাপড়ের খ্যাতা ভালো, জাতের মেয়ে কালোও ভালো (খান্দানী জিনিসের সব কিছুই ভালো)।
৫। জড়ের বাঁশ ঝড়ে পড়ে না (একতাই বল)।
৬। জামোই চেনে পুত্‌ড়ো চেনে না (জামাই এর ভাই বেরাদরকে চিনতে না চাওয়া)।
৭। জনে জনে মাতুব্বার, ঝুটকুলি তার জুমাদ্দার (প্রত্যেকে মাতুব্বর হতে চাইলে গুরুত্ব থাকেনা)।
৮। জন্ম-মৃত্যু-বিয়ে, তিন বিধাতা নিয়ে (জন্ম-মৃত্যু-বিয়ে আল
¬াহর ইচ্ছাধীন)।
৯। জামোই এমনি আসলিই খুশি/তার উপর আইছে দুডে তাল হাতে করে (রহস্যপূর্ণ অভিব্যক্তি)।
১০। জ্বরে করে কি, মারে যে পিলেইতি (মুখ্যের চেয়ে গৌণের প্রাধান্য বেশি)।
১১। জামোই আসবে নেবে ঝি, জামাইর রাগে পাবে কি (জামাইর অধিকারের মাত্রা সীমিত)।
১২। জোন-জামাই-ভাগনা, তিন নয় আপনা (কামলা, জামাতা ও ভাগ্নে নিজের হতে জানেনা)।


১। টাকি টিবেন
  টিবেনো (অকারণে ঝুলিয়ে রাখা)।
২। টেংরিতি জুৎ হইছে (ভালো অবস্থা ফিরে পাওয়া)।


১। ঠেলাঠেলির ঘর, খুদায় রক্ষা কর (এজমালির সুরক্ষার আশা বৃথা)।
২। ঠ্যালায় পড়লি ছুঁচোয় নামাজ পড়ে (কোন কিছু করতে বাধ্য হওয়া)।

১। ডুলি ভাড়ায় বৌ বিক্রি (অপরিণামদর্শী খরচ)।

১। ত্যাল নূনও গ্যালো, আইসটে গন্ধও কলো (যে খরচে দুর্নামের ভাগী হতে হয়)।
২। তাঁতির কাম কুসটা কাটা, বাঁশের চাইয়ে কুঞ্চি মুটা (সব কাজ না পারলেও অনধিকার চর্চা করা)।
৩। তিন দিনের বৈরেগী হয়ে ভাতেরে কয় অন্ন (হঠাৎ পরিবর্তন দৃষ্টিকটু)।
৪। তা ঐর আম দুধ, মা ঐর স্যালাম (তাঐ-মাঐকে খুশি করা কষ্ট)।
৫। তাল গাছের আড়াই হাত (বহুকষ্টেও শীর্ষে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব)।


১। থাহুক, আর সুরো ঢালার দরকার নেই (যেচে গিয়ে ভালো মানুষী কথা বলা)।
২। থমথমে আকাশ, ঝড়ের আভাস (গম্ভীরতা আশংকার উদ্রেক করে)।


১। দাওয়ালের থোড়ে আবার ত্যাচ পাতা (ক্ষুদ্রকে আরো তুচ্ছ জ্ঞান করা)।
২। দোদেল বান্দা না পায় বেহেশত, না পায় দোজখ (দ্বিধান্বিত মনে কোন লক্ষ্যে পৌঁছানো কষ্ট)।
৩। দূরির নলার চাইয়ে কাছের ফুটি ভালো (অজানার বিশাল প্রাপ্তির আশা পরিত্যজ্য)।
৪। দুক্কির সুক হোলি চ্যারাগ জ্বালায় পাদে (দু:খীর হঠাৎ প্রাপ্ত বিত্ত অপব্যয় বাড়ায়)।
৫। দ্যাঁতো বিবির হাসাও বুজা য়ায় না, কান্দাও বুজা যায়না (উচুঁ দাঁতীর হাসা কান্না বুঝা ভার)।
৬। দাঁড়াতি দিলি
  বসতি চায়, বসতি পারলি শুতি চায় (ছাড় দিলে প্রত্যাশা বেড়েই চলে)।
৭। দাদা ছেলো দাঁড়ায়ে, সে দেলো এটটু বাড়ায়ে (কথার/কাজের মাধ্যমে কষ্টকে বাড়িয়ে তোলা)।
৮। দাড়ালি দন্ড, বসলি ক্রোশ, পথ কহে তাই আমার কি দোষ (পথে হাটতে নেমে পারত পক্ষে থামতে নাই)।
৯। দায় ধার নেই, তার আছাড়িতি জুৎ আছে (আসলে অকর্মন্য হলেও ফাটফোট বেশি)।
১০। দেবোনা তার আছাড়ি দেখলি কি অয় (থাকলেও না দেবার বাহানা)।
১১। দাশেরা লোক ভালো, দুডে কাঁটাল দিতি চাইছে, আরো এটটা দেবে (মিথ্যে আশ্বসত্ম)।


১। ধানে দর হয়ে কত পারা-চিতে ব্যাপারী দেখলাম (লাভের লোভে বিচিত্র সব ব্যাপারী আসে)।
২। ধীরে রানদো সুস্থে খাও, জুড়োলি তার স্বাদ পাও (চটজলদি রান্না খেলে স্বাদ পাওয়া যায় না)।
৩। ধাইড়ের শাপে গাং শুকোয় না (প্রকৃতির নিয়ম ঠিকমতই চলে)।
৪। ধনজন জোয়ারের পানি, যাতি আসতি সুময় লাগেনি (অর্থ বিত্ত যে কোন সময় আসতে যেতে পারে)।
৫। ধাইনো হাটায় ওল নামানো (হঠাৎ করে অন্য প্রসঙ্গ নিয়ে আসা)।
৬। ধারেও না ধারায়ও না (বাধ্যবাধকতা হীন)।


১। না বনে জুদো হয়ে খা (গোলমাল করতে না দেয়া)।
২। না খাওয়ার বাহানা তার ভাজা মাছের সুরো(অহেতুক বায়না ধরা)।
৩। নন্দর গায় গোন্দ বেশি (উপেক্ষিতের দোষ বেশি ধরা হয়)।
৪। নাপিত দেখলি কেনি বাড়ে (কম দরকারী কাজ করিয়ে নেয়ার ইচ্ছা পোষণ)।
৫। নাবি ছাওয়াল নামে আর নাবি ধান বানে (শেষ বয়সের সন্তান আর অসময়ের ফসলের আশা কম।
৬। নাতি খাতি ব্যালা গ্যালো শুতি সুমায় পালাম না (সময়মত সব কাজ শেষ করতে না পারা)।
৭। নতুন নতুন পোয়াতি, না জানে বিয়েতি (হবু মাতার সব কিছুতেই আনাড়ি পনা থাকে )।
৮। নতুন কাইয়ো গু খাওয়া শিখলি গপ্‌সে গপ্‌সে খায় (নতুন নেশা খোরের মাত্রা জ্ঞান থাকেনা)।
৯। নামাজ পড়তি বসে রুজা বাইদে গ্যালো (একটা শেষ না হতেই অন্যটা শুরু করতে বাধ্য হওয়া)।
১০। না পাতি নাতি ভাতার, তাই নিয়ে গাংগে সাঁতার (অসামঞ্জস্যকেই অগত্যা গ্রহণ করা )।
১১। নরম মাটি পালি কেঁচো বাইয়ে ওঠে (দুর্বলের উপর সবাই একহাত নিতে চায়)।
১২। নাই ঘরে খাই বেশি (অনটনের সংসারে চাহিদা প্রকট থাকে)।
১৩। নাক দিয়ে কাম নেই, ফাপ সরলিই হলো (গরজ বড় বালাই)।
১৪। নায়েব মশাই কান মলোতো মলো, হাটের বেলা যায় (অহেতুক দীর্ঘ সময় ঠেকিয়ে রাখা)।
১৫। নিহাসের কূলি শিয়েল হয়ে গেছে (খাই খাই স্বভাব প্রাপ্ত হওয়া)।
১৬। নিজের করে ভালো পরের যত পারো (আগের নিজের কাজ, পরে অন্যের)।
১৭। নিজির ব্যালায় আটি-সাটি, পরের বেলায় চিমটি কাটি (নিজের দোষ ছাপিয়ে পরের দোষ ধরা)।
১৮। নিঃ কচ্‌ কচির উপোস ভালো (খেলে পরে কথা শুনতে হলে তারচে উপোস থাকা ভালো)
১৯। নেই কাজ খৈ ভাজ (বসে না থেকে কাজে সময় কাটুক)।
২০। নসের মা খসে পলো (অনাদরের কদর বাড়া)।


১। পয়সা নেই কড়ি নেই বন্ধু কাইলও আইসো (অহেতুক আব্দার)।
২। পোড়োর মাইয়ে বাগুন চেনেনা (অতীতকে ভুলে যাওয়া)।
৩। পোনা দেখে নাফাউ, খ্যাত খান কার তা চেনো (কিছু দেখেই পেতে চাওয়া) ?
৪। পাতে দিলাম না কিছু, মাহায়-জুহায় খাইয়ো (যেচে নিষ্ফলা উপদেশ দেয়া)।
৫। পরান, খাতি চাইছিলি শগুনির গোশত, ভালো মত খা (আশা ভংগ হওয়া)।
৬। প্যাট ভরেতো চোখ ভরেনা (খাবার পরেও যার অতৃপ্তি থেকে যায়)।
৭। পুষির জাড়ে ভূষি ওড়ে, মাঘের জাড়ে বাগ কাঁপে (পৌষ ও মাঘে শীতে কাতরতা বাড়ে)।
৮। প্যাটে ক্ষিদে চোখি লাজ, মনে ধরেনা কোন কাজ (ক্ষিধে পেটে কাজে মন বসেনা)।
৯। প্যাটে গু থাকলি ঝিলাপী বানায় হাগা যায় (জমা থাকলে ইচ্ছে মাফিক কাজ করা যায়)।
১০।
  পয়সার মুরগীর ঠ্যাং তামাতি গোশত (টাকায় কেনা জিনিসের প্রতি দরদ বেশি)।
১১। পরের বাড়ির ফিটে, খাতি বড় মিটে (সীমিত জিনিসের কদর বেশি)।
১২। পরের জন্যি পরে কাঁনদে যদি সুমায় পায় (পরের জন্য দরদ দেখানো প্রায়ই হয়ে ওঠে না)।
১৩। পরের ভাতে বাগুন দ্যাও, হওয়া ভাতে জ্বাল দ্যাও (সর্বদাই সুবিধাবাদী চিন্তা)।
১৪। প্যাটে ধরলাম না বাছা, হাতে আর্যালামনা গাছা (নিজের আপন জিনিস না হলে
  মনঃকষ্টের কারণ হয়)।
১৫। ফাটা নাই পড়তি হোল নিয়ে টানাটানি (ফলাফলের আগেই অধি:চর্চা)।
১৬। পুরুষ না পরশ; যে কামে লাগাবা সেই কামে সরস (পুরুষ মানুষ কাজে ভয় পায় না)।
১৭। প্যাটে প্যাটে ঝিলাপীর প্যাঁচ (মনে মনে যার শয়তানি)।
১৮। প্যাটে খালি পিঠি সয় (পেট ভরা থাকলে কাজ করতে শক্তি পাওয়া যায়)।
১৯। প্যাটের গু হুড়ুম হয়ে গেছে (ভয়ে হাত পা পেটের ভিতর সেদিয়ে যাওয়া)।
২০। পড়ে পাওয়া চৈদ্দ আনা (ফ্রি জিনিস অবাধে গ্রহণ করা)।

১। ফিটে যখন নষ্ট হইছেই তো ভালো করে ভুগুল দে (দোষ হলে ভালো করেই হোক)।
২। ফোটেনারে মিয়া ভাই, ঘটে আর বারুদ নাই (কারো বাড়াবড়ি বন্ধ হওয়া)।
৩। ফোঁটে ফোঁটে পড়ে কান্দায় মানায় না (আস্তে আস্তে পড়ে এক সময় ভাড় ভরে উপছে পড়ে)।
৪। ফিরি ফিরি ডুগডুগি বাজাও (কৌশলে অবৈধ কাজ করে যাওয়া)।
৫। ফকিরির পায়ে লক্ষ্মী (ভিখারী যত দূয়ার দূয়ার ঘুরবে, ততই সে লাভবান হতে পারবে)।

১। বড় কামান কামালাম গাজীর গীত গাইয়ে/তিন টাহা কামালাম, চৈদ্দ সিহে খাইয়ে (যে কাজে লাভের চেয়ে লোকসান বেশি)।
২। বুজলিনে লো ফুলি, বুজবি দিন গেলি (সময় থাকতে বুঝতে না চাওয়া খারাপ)।
৩। বিয়ের সুমায় ক’ন্যে বলে আমি হাগবো (জরুরী সময়ে অযৌক্তিক পিছু টান)।
৪। বাদশাছে বেগম মেলে মোচকে মেলে মোচ / য্যায়ছাছে ত্যায়ছা মেলে ছোচকে মেলে ছোচ (যে যেমন তার তেমনই জোটে)।
৫। ব্যালা ঠিকই যাবেনে, তয় ফহিরির তেইশটা মাইরে (কষ্টের বেলা শেষ হতে চায়না)।
৬। বাওনে মন্তর পড়ে, ফাটায় কয় আমার হোলে শোনে (মুরুব্বীর উপদেশ না শোনা)।
৭। ‘বাওন, ঘি খাও কট্টুক’ ? ‘নিজির বাড়ী ছটাক মটাক, পরের বাড়ি স্যর স্যর’ (সুযোগ পেলে পরের জিনিস ধরে খাওয়ার অভ্যাস)।
৮। বাবার কালে ছেলোনা গাই, চালোন আনেক দুয়ায় খাই (কোন ব্যাপারে বেশি আদিখ্যেতা দেখানো )।
৯।
  বেশি পিরিতির মাজায় ভাংগে (অতিরিক্ত বন্ধুত্বের পরিনাম খারাপ )।
১০। বাবা,গেলি মোনে,বুজতি বুজতি যাইস (ভবিষ্যৎ না ভেবে যাত্রা করে পস্তানো)।
১১। বিনা ভুলি মরণ নেই, মরণ কালে ওষদ নেই (মৃত্যুর পিছনে
  কারণ থাকে, মরণ কালে ঔষধ কাজ করে না)।
১২। বান্ধনের গুড়ায় বান্ধন পড়লি কট কট করে (শক্তি মানের সাথে শক্তি মানের পাল
¬া সহজ হয় না)।
১৩। বড় গাছে নাও বাইনদে না (বড় লোকের সাহচর্যে অধিক আশা করতে নেই)।
১৪। বাঁচতি যদি চাও তো ভায়নার পাচন খাও (কোন কিছু করতে/মেনে নিতে বাধ্য করা )।
১৫। বসে খালি রাজার গুলায়ও টানায় না (কর্মহীনের বিশাল ভান্ডারও অল্প দিনে শেষ হয়ে যায়)।
১৬। বয়স গেছে ভাটি, খাওয়ার জোরে হাটি (বৃদ্ধের সুস্থতা খাবারের উপর নির্ভরশীল)।
১৭। বাবা বলো, চাচা
  বলো; কলাডা চার চার পয়সা (পয়সা / স্বার্থের ক্ষেত্রে মিষ্টি কথায় কাজ হয়না)।
১৮। বড় ঘরামীর চালে ছোন থাহে না (দক্ষ লোক হয়েও সময়মত নিজের কাজ সম্পন্ন না করা )।
১৯। বাঁশ তলায় বিয়েলো গাই, সেই সম্পক্কে খালাতো ভাই (অকারণে সম্পর্ক খোঁজ করা)।
২০। বাইটে মানসির প্যাটে প্যাটে শয়তানী (বেটে লোকের কুবুদ্ধি বেশি)।
২১। বাপেরেই বা কবো কি, মারে মারলো বাড়ি/আর মারেই বা কবো কি, বাপের ধরলো ধাড়ি (সন্তানের জন্য নিতান্ত অস্বস্থিকর অবস্থা সৃষ্টি করা)।
২২। বান্দররে লাই দিলি মাথায় ওটে (বেয়াদব প্রশ্রয় পেলে আরো বেয়াদবী করে)।
২৩। বাপের গাতি না ধাপের গাতি; বেচতি লাগে মোটে রাতি (বাপের সম্পত্তি বেচতে সময় বা মায়া লাগেনা)।
২৪। বেন্নে ভাউড়ার ভানাচি দেখলি গা জ্বলে (অতি আদিখ্যেতা বিরক্তিকর)।


১। ভাত ছাড়ে তো সাথ ছাড়ে না (দূরের যাত্রায় দ্রুত সাথীদের অনুগামী হতে হয়)।
২। ভাল
¬ুকে জ্বর, ইচ্ছেমত যায়; ইচ্ছে মত আসে (ভান ধরে কাম থেকে বিরত থাকা)।
৩। ভাশুর আমার বড় বুজাই বোজে/ নিজির জমি বর্গা দিয়ে পরের জমি চষে (কম বুদ্ধির পরিচয় দেয়া)।
৪। ভাশুরীর নাম সবার জানা; ভাশুরীর নাম নিতি মানা (জানা জিনিস ইচ্ছে করে এড়িয়ে যাওয়া)।
৫। ভাশুর চিরকাল আমার সাতে আড়ি দিয়ে গ্যালো:/আজ আমার মাইয়েডার বিয়ে, আর আজ ভাশুর গ্যালো মরে (নাহক অভিযোগ)।
৬। ভিজেও পাঁচ আঁটি, শুকনোও পাঁচ আঁটি (যার কাছে সবই সমান)।
৭।
  ভারাণীর শাগে আদা (যা সাজে না তা করতে যাওয়া)।
৮। ভাত খাও ভাতারের, গুন গাও নাংগের (প্রকৃত উপকারীর স্বীকৃতি না দেয়া)।
৯। ভাত দিয়ার মুরোদ নেই, সুহাগ করার গুঁসাই (স্বার্থ না দেখে স্বার্থ পেতে চাওয়া)।
১০। ভাইর ভাত আর ভাইয়েনীর হাত (ভাবী না চাইলে ভাইয়ের ভাত কপালে জোটে কম)।
১১। ভাগের ত্যাল কচায় মাখাবো (প্রয়োজন না থাকলেও ভাগ ছাড়তে নারাজ)।
১২। ভদ্দর নোকে এমন পাইয়োও খায়,/পান্তাভাতে দিলি সেতা ভাসতি ভাসতি যায় (মর্ম না বুঝে মন্তব্য করা)।
১৩। ভাইতি মাইরে গেলিও ফিরে চায় (সহোদরের প্রতি দরদ থাকেই)।
১৪। ভরা প্যাটে বালিধারার বাড়ি (অতি আশার সব আয়োজন নস্যাৎ হওয়া)।
১৫। ভাড়ার নৌকোর দাড়া থাকলিই অলো (ভাড়ার জিনিসের প্রতি দরদ কম)।


১। মানুষ মরে ম্যালে আর খাটাশ মরে ত্যালে (কু প্রভাবে মানুষ আর অলস মেদ জমে খাটাশ মরে)।
২। মন চলেতো যাও,আর ক্ষিদে লাগেতো খাও (ইচ্ছের বিরুদ্ধে কাজ হয়না)।
৩। মরারে মারো কেন? নড়ে চড়ে নাযে (দুর্বলের উপর অত্যাচার করাটা সহজ)।
৪। মাইয়ের মাও না, ছাওয়ালের মাও না (যার মধ্যে চেতনা বোধ কম)।
৫। মিয়ার কতা বড় খাসা; মিয়ার ভিতর বাড়ী যাইয়ে দ্যাহো, দাড় কাইয়োর বাসা (অন্ত:সারশূন্যতা কৌশলে এড়ানো)।
৬। মোটে মা নানদে না, তার তপ্ত আর পান্‌তা (বাছবিচারের সুযোগ কম থাকা)।
৭। মা দুগ্‌গাই যদি জলে গ্যালো, তয় ঢাহি বালা দিয়ে করবো কি (অপ্রধান কিছু রেখে লাভ নেই)।
৮। মার পোড়েনা পোড়ে মাসির, কারণ ঘটায় সেই ফাঁসীর (অহেতুক দরদ দেখানো ভালো নয়)।
৯। মাথায় চুল নেই, বোগোলে বাবরী (যা নেই তা অতিরিক্ত করে দেখানোর প্রচেষ্টা)।
১০। মাঘে ম্যাঘে যদি ছাড়ে বাউ, আগে মরে বুড়োবুড়ি, পাছে মরে ছাও (মাঘ মাসের মেঘ ও বাতাস সুতীব্র শীত নামায়)।
১১। মুলার কাছে আবার গাবীন ধাড়ি (যে বাছ বিচার করতে চায়না)।
১২। মাচার কুটুম ঠিক থাকলি সব কুটুম ঠিক থাহে (ঘরে খাবারই আত্মীয়তার বন্ধনের জোর)।
১৩। মরুক গরু ফলুক ধান, বছর বছর কিনে আন (আষাঢ়ে চাষে গরুর কষ্ট কৃষক পরোয়া করেনা)।
১৪। মায়ের গুণে ঝি, আর ভাড়ের গুণে ঘি (ভালো পাত্র থেকে ভালো জিনিস আশা করা যায়)।
১৫। মাকাল ফল আর সাইলো মূলো; উপরে রাঙ্গা ভিতরে কালো (মাকাল এবং
  সাইলোমূলোর ভিতর খারাপ)
১৬। মা মরে গেলি বাপ হয়ে যায় তাঐ (মায়ের অবর্তমানে বাপের স্নেহে ভাটা পড়ে)।
১৭। মিত্তে কতা নাড়ার ছাই, এইতো আগুন এইতো নাই (মিথ্যার ভিত্তি খুবই দুর্বল)।
১৮। মরবো বলে আর্যাবোনা, বাঁচলি খাবো কি (হতাশায় হাল ছেড়ে দিলে পরিনামে পস্তাতে হয়)।
১৯। মারে কোটে পিল
¬াদে, মুচড়ায় পীর মাওন (একজনের কাজে অন্যজনের বাহবা নেয়া)।
২০। ‘মশাই কোতো ক্যান’? ‘কোপে আসে’ (কষ্টের গোঙানী এমনিতেই বেরিয়ে আসে)।
২১। মামুও ছোট না, ভাগ্নেরও বয়স কম হয়নি (দুজনেই সেয়ানা)।
২২। মানির মান আল্লায় রাহে/ বাপেরে হাটের মদ্দি জুতো দিয়ে পিটেচ্ছে, আমারে ধরতি পারিনি (যার পর নাই অপদার্থ, ধিকৃত ব্যক্তি)।
২৩। মরণের কতা চরণে কয় (দিন ফুরিয়ে এলে হাটতে কষ্ট
  হয়)।
২৪। মরেও গ্যালো মাইরেও গ্যালো (কারো মৃত্যুতে পরিবার সর্বশান্ত হওয়া)।
২৫। মাইরেও জেতপে, কাইনদেও জেতপে (ছোট ও আদুরের বায়না বেশি)।
২৬। মাচা নেই তার বুদবার (অসংযমীর ছুৎমার্গ মানায় না)।
২৭। মা কালী তুমি ঠাট্টাও বোজোনা, মস্করাও বোজোনা (আপনজনের মুখের ও মনের কথা বুঝতে পারা উচিত)।
২৮। মাথায় উঠিছে বিষ, কিসির মদ্যি কি দিস (মাথা গরমে বাছ বিচার কম করা হয়)।
২৯। আমি মোছলমানের এক কতা, দিতি চাইছিলাম, দিলাম না (কৌশলে জোর প্রদর্শন)
৩০। মান্দারের নায় সুন্দরীর ঘোলোই (চরম বৈপরীত্য)।


১। যার মনে যা, ফালদে ওঠে তা (প্রত্যেকেরই মনে নিজের চিন্তার প্রতিফলন আগে আসে)।
২। যত চতুর তত ফতুর (চালাকির পরিণাম ক্ষতি)।
৩। যেইনা রোঙ্গের বিয়ে, তার বাজনা বাজায় শুয়ে (সামান্য ব্যাপারে দৃষ্টিকটু আয়োজন)।
৪। যদি আইড়ে রোহে, লাঠি মারো কোহে (অবাধ্যকে সাথে সাথে শাসন করা)।
৫। যুগীর পানি হাড়ে আর নাড়ে / যুগী ঘরে গেলি
  হাঁড়ি কুড়ি মরে (উপকারীকে অবজ্ঞা / অস্বীকার করা)।
৬। যেমন তেমন চাকরী ঘি ভাত
  (চাকুরী থাকলে খুবই সাশ্রয় হয়)।
৭। যে যেমন ঢেমনি, জগৎ দ্যাহে তেমনি (নিজের ছায়া অন্যের মধ্যে দেখা)।
৮। যার সাথে ঘিন্নায় কতা কইনে-/তার ছাওয়াল কয়, ‘তাঐ তামুক খাইয়ে যাও’ (অনভিপ্রেতের অহেতুক খাতির পাতানোর চেষ্টা )।
৯। যদি থাহে মনে তো থাহে হাঁড়ির কোণে (মনে চাইলে/রাখলে অন্তত: কিছু থাকে)।
১০। যার গা কাটলি এক ফোঁট রক্ত পড়ে না, সে কয় আমার ‘হাই ব্লাড প্রেসার’ (অবাস্তবকে বাস্তবে রূপদানের চেষ্টা)।
১১। যত ছেলো নলবুনে সব হল কীত্তুনে (সুযোগে আনাড়িও দক্ষতা প্রমানের চেষ্টা করে)।
১২। যে যতখানি পানিতি নামবে তার ততখানি ভেজবে (অপরাধের পরিমাণ নির্ধারিত হয়ে যায়)।
১৩। যা অয়না বিয়ের রাতি, তা অয়না আশ্বিন-কাতি (সুযোগের সদ্ব্যবহার প্রথমে না করলে পস্তাতে হয়)।
১৪। যার পাটা তার নুড়া, তার ভাংবো দাঁতের গুড়া (অন্যের জিনিস দিয়ে তাকেই শায়েস্তা করা)।
১৫। যাইয়ে থুয়ে থাহে যে, চৈদ্দপুষ্যির বড় সে (মরে ছেড়ে যাবার পর যে থাকে সেই সব কিছুর মালিক)।
১৬। যারে দে ছাড়াবো ভূত তারে ধরিছে ভূতি (সমাধানকারী অবাধ্য হলে সমাধানের আশা বৃথা)।
১৭। যে খাইছে তার জন্যি রানদো- আর যে খাইনি তার জন্যি ভানো (জরুরী দরকারকে কম গুরুত্ব প্রদান)।
১৮। যত হাসি তত কান্না, কয়ে গেছে রামসন্না(হাসির পিছনে কান্না প্রতীক্ষায় থাকে)।
১৯। যে চাচীর রানদা খাইনি, সে চাচী বড়ই ভালো রানদে (কারো পারঙ্গমতা না জানা পর্যন্ত সে খুব দক্ষ)।
২০। যদি কলো চাচী, তয় আর কুতায় আছি (একটু লাই পেলেই পেয়ে বসে)।
২১। যদি ওঠলো বাই, রাই চল্‌ মথুরায় যাই (হঠাৎ কথায় তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেয়া)।
২২। যার গলায় গাড়, সে কয় বাঁচপো-/ আর যার হাটুতে ঘা, সে কয় আমি মরবো (ছোটকে বড় আর বড়কে ছোট করে দেখা)।
২৩। যে দেলো অন্তরে ব্যতা, তার সাতে আবার কিসির কতা (আপনজন কষ্ট দিলে বড় বেশি বাজে)।
২৪। যে রাইনদে বাইড়ে সব করলো, সে কিছু হলনা- /আর যে কলো ‘ফু দে খা’ সেই হল সব (প্রকৃত বিচার করতে না পারা)।
২৫। যায় যাবে মাহাজনের যাবে, ফইড়ের তাতে কি হবে (লোকসানের দায় মাহাজনের)।
২৬। যাওয়ার বেলায় খাওয়ার মাছ (শেষ সময়ে কিছু হাতিয়ে নেয়া)।
২৭। যদি খাবো কিনে, তো ক্যানো খাবো চিনে (কিনে খেতে হলে ভালো জিনিসই কেনা উচিত)।
২৮। যেহানেই রাত, সেহানেই কাৎ (উদ্বেগহীন
  দিন যাপন)।
২৯। যা নেই গাওয়ালে, তাই মাংগে ছাওয়ালে (সাধ্যের অতীত বায়না ধরা)।
৩০। যেমন পচা কাঁটাল, তেমন মুচি খদ্দের (ব্যক্তি অনুযায়ী রম্নচি বোঝা যায়)।
৩১। যার ঘা তার ব্যতা,অন্যের কিবা কতা (কষ্ট যার হয়, যার পোড়ে সেই বোঝে)।
৩২। যে লাউ সেই কদু (মূলত: পার্থক্য না থাকা)।


১। রুগী যহন তহন, উজা ছয় মাসের পথ (তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটাতে বিলম্ব হওয়া)।
২। রগে টানে পদে কি করে (রক্তের টান উপেক্ষা করা যায় না)।
৩। রুয়ো-শুয়োর বছরে, পাটের জমি চষোরে (মাঝে মাঝে রোদ মাঝে মাঝে বৃষ্টির বছরে পাট খুব ভালো জন্মে)।


১। লাভের ধন
  পিপড়েয় খায় (লাভের অংশ অনেক সময় কম গুরুত্ব পায়)।
২। লাক টাহার বাড়ী আর পাঁচ সিহের ধাড়ি (সাজানো-গুছানো বাড়ি এক ছাগলেই শেষ করতে পারে)।
৩। লাক টাকা সিতেনে, আর কান ভাংগানী পোতেনে (স্ত্রীর প্ররোচনায় বিপুল সষ্ণয়ও শেষ হয়ে)।
৪। লাবে লুয়া বয়, বিনা লাবে তুলোও বয়না (লাভের সম্ভাবনায় ,মানুষ কঠোর পরিশ্রম করতে পিছপা হয় না)।


১। শক্তরে ভক্ত,
  ঢিলেরে কিলে (শক্তি প্রয়োগ অবস্থার সাথে সম্পর্কিত)।
২। শুকোলো প্যাটের ফোম, মিটে লাগে তিতে গম (প্রচণ্ড ক্ষিধেয় বাছ বিচার থাকেনা)।
৩। শাগ শাগ আঠারো শাগ, কেনরে জামোই করো রাগ /হাঁড়িতি আছে আরো শাগ (একই জিনিসের পুনরাবৃত্তি করে পরোক্ষ ব্যবস্থা নেয়া)।
৪। শৈল গজালের ফুনা, যার যার মার সুনা (মার অনেক সন্তান হলেও সবই আদরের)।
৫। শিন্নি দেখলি মিদ্দার মা, কুত্তা দেখলি আমি না (অবাধ সুবিধা সবাই আগে নিতে চায়)।
৬। শরম চাইয়ে মরণ ভালো (অপমানিত হবার চাইতে মৃত্যু শ্রেয়তর)।
৭। শ্বশুর বাড়ি মধুর হাঁড়ি, তিন দিন পরে ঝাঁটার বাড়ি (শ্বশুর বাড়ি একাদিক্রমে বেশি দিন থাকতে নেই)।
৮। শুধু কাজল পরিলেই হয়না, চাহিবারও চটক থাকা চাই (সাজ-গোজ প্রদর্শনেও দক্ষতার প্রয়োজন হয়)।


১। সগোলির সগোল কতা, কানার দুই চোহির কতা (নিজের প্রসঙ্গটাকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া)।
২। সরকারি মাল, দরিয়ায় ঢাল (সরকারি জিনিসের যথেচ্ছ ব্যবহার হয়)।
৩। সুমায় ভালো হোলি শালায় বাজান কয় (সুসময়ে সম্ভাষনের পরিবর্তন ঘটতে পারে)।
৪। সুসুমায়ে ভাংগা দুয়োড়িও মাছ বাধে (পরতা ফিরলে সব কিছুতেই লাভ হতে থাকে)।
৫। সুমায় মন্দ হোলি কোচ্ছের ধন সাপ হয়ে কামড়ায় (দু:সময়ে অতি আপনজনও ছোবল দেয়)।
৬। সুনা থুয়ে আঁচলে গিরে, সুনার আংটি ব্যাঁকা কিরে (স্বর্ণ স্বর্ণই, এর যত্ন আগে করতে হয়)।
৭। সাতে-পাঁচে দিয়ে জম্ম, ছাওয়ালের নাম হরিশচন্দ্র (সবার তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের
  ফসল সমাদৃত কম)।
৮। সাত দিনের ঝরা আর একদিনের খরা (একদিনের রোদ সাত দিনের বৃষ্টিকে ভুলিয়ে দেয়)।
৯। সাহসে লক্ষ্মী গুহ্যে বাঁশ, হয় ভালো নয় সব্বোনাশ (সাহসী উদ্যোগে ভালো মন্দ দুইই হতে পারে)।
১০। সাধা ভাত আর যাচা কণ্যে ছাড়তি নেই (বিশেষ অনুরোধ রক্ষা করলে আখেরে ভালো হয়)।
১১। সগোলের হাত এ্যাড়ানো যায়, খুঁৎ খুতে নাঙ্গের হাত এড়ানো যায় না (খুঁৎ খুতের বায়না না করা যায় না)।
১২। সর্ষে বাড়ে ফুলি আর লতা বাড়ে শুলি (গাছে ফুল এলে সর্ষে গাছ এবং বাউনি পেলে লতা বাড়ে)।
১৩। সোম-শুক্কুরি চাষ, বুদ-বিষ্যুদি গৃহবাস (প্রবাদের অনুরূপ ভালোর ইঙ্গিতবাহী)।


১। হাম পেয়াদা জৈদা লেঠেল কাইজ্যে করেংগা/ঢাল নেই তরোয়াল নেই খেম্‌চি মারেংগা (অসারের তর্জন গর্জন)।
২। হাম ভালা তো জগ্‌ ভালা
 (নিজে ভালো তো জগত ও ভালো)।
৩। হাতির শুঁড়ি আসে যায়, ব্যাঙ দেখে ভয় পায় (কৃত্রিম ভীতিতে ভীত হওয়া)।
৪। হোলি আর রোতি পারিনে (অত্যল্প সময়ের জন্য অধৈর্য হয়ে পড়া)।
৫। হলদি খালিই যদি রাঙা ছাওয়াল হতো (সব কাজের প্রত্যাশানুরূপ ফল না পাওয়া)।
৬। হাগবেও না, পথও ছাড়বে না (সবুজ সংকেত না দিয়ে অধৈর্যের কারণ ঘটানো)।
৭। হাভাতের হোলে বাজ পড়ে (অত্যুৎসাহী অপরিনামদর্শীর আশা ভংগ হয়)।
৮। হাইসোনা বুড়োর দুক্কু দেখে, ও বুড়োরও সাত ছাওয়াল (কাউকে দেখে করুণার পাত্র ভেবে নেয়া
  ঠিক নয়)।
৯। হাত ঝাড়লি বোঝা. তয় ঝাড়াটা নয় সোজা (ইচ্ছে করলে অনেকেই যথেষ্ট দিতে পারে)।
১০। হয় পরাণ থাকপে, নয় পরান যাকপে... (যে কোন ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত)।
১১। হয় ঘরে যাও, নয় পড়া পানি খাও (শর্ত মানতে বাধ্য করা)।
১২। হাতির মুখে দুব্বো ঘাস (প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই অকিঞ্চিৎকর)।
১৩। হাজার টাহায় বাওন ভিকারী, তিন টাহায় চাঁড়াল চৌধুরী, আর পাঁচ সিহেয় নাইড়ে ব্যাপারী (টাকার কামড় শ্রেণী বিশেষে পার্থক্য হয়)।
১৪। হাইগে ছোচেনা, মুতে গলা পান্‌তি যায় (প্রধান ছেড়ে অপ্রধানকে প্রাধান্য দেয়া)।
১৫। হাইতেরে কাম করে, নাম হয় মদ্দের (প্রয়োজনীয় উপকরণ কাজে সুনাম বৃদ্ধির সহায়ক)।
১৬। হাগা নাড়ির মুখে টোনকো (কাজে নয়, কথায় বড় বড়)।
১৭। হাজার কতায় নেমনতন্ন, এক কতায় খাবো না (কোন ভাবেই রাজি না হওয়া)।

(শেষ)

No comments:

Post a Comment

স্বাগতম

বহু পরিশ্রমের ফসল এই ব্লগ শুধু আপনাদেরকে আনন্দ দেয়ার জন্য। আপনি আনন্দ পেলেই আমার পরিশ্রম সার্থক বলে মনে করব।

এই ব্লগকে আরও সমৃদ্ধ করতে যেকেউ আমাকে প্রবাদ বাক্য সরবরাহ করলে তা আপনার নাম সহ এই ব্লগে প্রকাশ করা হবে। আপনাদের সহযোগিতা কাম্য।

ধন্যবাদ।